শঙ্খচূড় : সাদাত হোসাইন
প্রিন্ট / প্রকাশনী: অন্যপ্রকাশ
- Estimated Delivery : Up to 3 business days
- Free Shipping : On all orders over 1500 BDT
অমাবস্যার রাত। ঘুটঘুটে অন্ধকার। চারপাশের সুনসান নীরবতার মধ্যে ঘোড়ার খুরের একটানা ঠকঠক শব্দটা বেশ কানে বাজছে। চলন্ত জুড়িগাড়ির ভেতর মৃদু আলোয় জড়সড় শঙ্কিত দুটি নারীমুখ। লণ্ঠনের কম্পমান আলোয় তাদের ছায়া কাঁপছে। দূর কোথাও থেকে হঠাৎ হঠাৎ ভেসে আসছে নাম-না-জানা প্রাণীর বিভীষিকাময় চিৎকার। সেই চিৎকারে গা হিম হয়ে আসে। যেন কোনো অশরীরী অশুভ আত্মা ভর করেছে তাদের ওপর। রানি বিভাবতী পাশে বসে থাকা শাশুড়িমাতার হাতখানা ধরলেন। তার শরীর কাঁপছে। মুখ রক্তশূন্য। চোখে আতঙ্ক। তিনি ফ্যাকাশে গলায় বললেন, ‘মা…।’
অন্নপূর্ণা দেবী পুত্রবধূর হাতখানা হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরলেন। তবে কথা বললেন না। যেন এই অশুভ রাত্রির অন্ধকারে তিনিও সাহস সঞ্চয় করতে চাইছেন। বিভাবতী বললেন, ‘উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন তো, মা?’
অন্নপূর্ণা দেবী এবারও কথা বললেন না। তিনি গাড়ির ঘুলঘুলিতে চোখ রাখলেন। পেছনে আরেকটি জুড়িগাড়ি। তার পেছনে সতর্ক ভঙ্গিতে দুটি ঘোড়া পাশাপাশি এগিয়ে আসছে। একটিতে তার কনিষ্ঠ পুত্র বিনয়াদিত্য। অন্যটিতে ভাশুরপুত্র অক্ষয়াদিত্য। অক্ষর রাজ্যের সেনাপতিও। তারা এই গভীর রাতে যাচ্ছেন দুর্গাপুরের অশ্বত্থাশ্রমে। সেখানে আশ্চর্য এক সাধুর আবির্ভাব ঘটেছে। জনশ্রুতি রটেছে যে সাধু স্পর্শের মাধ্যমেই লোকের রোগব্যাধি সারিয়ে দিতে পারেন। এই কথা রাজ্যের রাজধানী চন্দ্রগড় রাজবাড়ি অবধিও পৌঁছে গেছে। চন্দ্রগড় রাজ্যের নামেই রাজধানীরও একই নাম ‘চন্দ্রগড়’।
সাধুর এমন অলৌকিক ক্ষমতার কথা শুনে রাজমাতা অন্নপূর্ণা দেবী ভেতরে- ভেতরে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। তবে সে কথা বাইরে কারও কাছেই প্রকাশ করেন নি তিনি। কিন্তু দিন তিনেক আগে রাতে ভয়ানক এক দুঃস্বপ্ন দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেন নি রাজমাতা। সেই দুঃস্বপ্নই তাকে মধ্যরাতের এই গোপন যাত্রায় বাধ্য ।
Reviews
There are no reviews yet.